সর্বশেষ

বাড়ছে ১৪ দলের সক্রিয়তা, 'নিজ পায়ে দাঁড়িয়ে ভূমিকা রাখার তাগাদা'

প্রকাশ :


 

২৪খবরবিডি: 'আগামী নির্বাচন ঘিরে আবারও সক্রিয় হচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। এরই অংশ হিসেবে জোটের সর্বশেষ বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়। কার্যক্রমে গতি আনতে নির্বাচনের আগেই প্রতিটি জেলায় জোটের সমন্বয় কমিটি পুনর্গঠন ছাড়াও বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে রাজপথ দখলে রাখতে সিরিজ কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এরপর জোটের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কর্মসূচি আয়োজনের নির্দেশনা পাঠানো হয়। ঢাকা মহানগরীতেও জোটের কার্যক্রম শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। গত মাসে ঢাকা মহানগর ১৪ দল কয়েক দফা বৈঠক করে আন্দোলনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করেছে।'

-ক্ষমতাসীন জোটের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গেল নির্বাচনের পর নানা কারণে ১৪ দলে টানাপোড়েন বাড়ে। বিশেষ করে জোটগতভাবে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় এলেও মন্ত্রিসভায় কারও জায়গা না পাওয়া ক্ষুব্ধ করে শরিকদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা শরিকদের 'নিজ পায়ে দাঁড়ানো' কিংবা 'বিরোধী দলে' থেকে নিজ নিজ কার্যক্রম চালানোর পরামর্শ দেন। আর নির্বাচনের বিজয় উদযাপনে ২০১৯ সালের ১৯ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে 'বিজয় সমাবেশ' করে আওয়ামী লীগ।

এই সমাবেশে শরিকদের আমন্ত্রণই জানানো হয়নি। এসব নিয়ে ক্ষুব্ধ ১৪ দলের নেতারা সরকারের সমালোচনায় মুখর হন। বাড়তে থাকে দূরত্ব। এ অবস্থার মধ্যেই দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে ঝিমিয়ে পড়ে জোটের কার্যক্রম। একপর্যায়ে নানা কারণে ক্ষুব্ধ শরীফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন জাসদ জোট থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর থেকে গত তিন বছর ঢিমেতালেই চলছে ১৪ দল। তবে ১৩ জুন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভার মধ্যদিয়ে জোটকে সক্রিয় করার তৎপরতা শুরু হয়। এরপর গত ২০ জুলাই জোটের শীর্ষ নেতারা একসঙ্গে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দীঘলিয়ায় সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। অবশ্য মাঝে জুনে বিএনপি নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করলে রাজপথে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে ক্ষমতাসীন জোট। আর নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু উদ্বোধন ঘিরে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে বিশাল শোভাযাত্রা ও সমাবেশ করেন তাঁরা।

-এসব তৎপরতার আগে ১৫ মার্চ জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ১৪ দলের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রায় তিন বছর পর 'অবহেলা ও অবমূল্যায়নে' জোটের শরিকদের সঙ্গে দূরত্ব ঘোচাতেই তিনি এই বৈঠক ডাকেন। ওই বৈঠকে শেখ হাসিনা স্পষ্ট করেন, গত তিনটির ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ১৪ দল জোটগতভাবে অংশ নেবে। তিনি জোটের মধ্যকার সমন্বয়হীনতা দূর করে কার্যক্রম জোরদার ও শক্তিশালী করার দিকনির্দেশনা দেন। জোটপ্রধানের এই নির্দেশনার প্রায় তিন মাস পর ১৪ দলকে সক্রিয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুর নেতৃত্বে সারাদেশে জোটকে সক্রিয় ও শক্তিশালী করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আর ঢাকা মহানগরে জোটের সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম গোছানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রমকে।

বাড়ছে ১৪ দলের সক্রিয়তা, 'নিজ পায়ে দাঁড়িয়ে ভূমিকা রাখার তাগাদা'

'জোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন জানান, কিছু সমস্যা থাকলেও জোট ঐক্যবদ্ধই রয়েছে। আগামী দিনে এই ঐক্য জোরদারে নানা কর্মসূচি নিয়ে সক্রিয় থাকবেন তাঁরা। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, অতীতের মতো ২০২৩ সালের নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াত চক্রান্ত শুরু করেছে। শেখ হাসিনার নির্বাচিত সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র আগে যেভাবে ব্যর্থ করেছি, এবারও আমরা ১৪ দল মাঠে থেকে তাদের রুখে দেব।'

-১৪ দলের সমন্বয়ক-মুখপাত্র আমির হোসেন আমু ২৪খবরবিডিকে বলেন, জোটের ঐক্য আগের মতোই অটুট আছে। মাঝে করোনার কারণে রাজপথে তেমন কর্মসূচি নেওয়া যায়নি। এখন পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় রাজপথের কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত জোট ও সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র রাজপথে থেকেই জোটের নেতারা মোকাবিলা করবেন বলে জানান তিনি।

'বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালের ১৫ জুলাই আওয়ামী লীগ, ১১ দল, জাসদ, ন্যাপসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলো ২৩ দফার ভিত্তিতে ১৪ দলীয় জোট গঠন করে।'

Share

আরো খবর


সর্বাধিক পঠিত